মু্ন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার হলদিয়া বাজারে একটি ভবনের একাংশ ভেঙে ফেলেছে উপজেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় ভবন মালিকের দাবি আদালতের কারণ দর্শানো নোটিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। অন্যদিকে, উপজেলা প্রশাসন বলছে ভবনটির কিছু অংশ অবৈধ সে অবৈধ অংশ অপসারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ভবনের মালিক মো. আক্তার হোসেন খান লাবু মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সাহবুদ্দিন ট্রেডিং কোং’ ও তার ছোট ভাইয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিমান্ত ট্রেডার্সের ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠান মালিকের অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী মো. আক্তার হোসেন খান লাবু অভিযোগ করে বলেন, বর্ধিত অংশ না ভাঙতে উচ্চ আদালত ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠিয়েছে প্রশাসনকে। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিস তা উপেক্ষা করে আমার প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিয়েছে। তাছাড়া আমার ভবনটি অবৈধ স্থানে হলে আনাকে নোটিশ দিবে। কিন্তু আমাকে কোনো নোটিশ দেয়নি । গত বৃহস্পতিবার ২০ তারিখ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল আউয়াল আমার মার্কেটের এখানে আসেন এবং মৌখিক ভাবে ভবন ভাঙতে বলেন। এবং তিনি রবির ২৩ তারিখ পর্যন্ত মৌখিক সময় দেন। আমি কোর্ট হতে ভবন ভাঙার কারন জানার জন্য কোর্ট থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ আনি। এসিল্যান্ড এবং ইউএনও বরাবর প্রেরণ করি। তারা আদালতের আদেশ পাওয়ার পরেও শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বাজার নিরব হয়ে গেলে মাটি কাটার যন্ত্র এস্কোভেটর (ভেকু) দিয়ে আমার ভবনের পশ্চিম অংশের দুই শাটার গুড়িয়ে দেয়। ভাঙার নেতৃত্ব দিতে আশা কর্মকর্তারা সাংবাদিক দেখে কোনো উত্তর না দিয়ে তরিঘরি করে স্থান ত্যাগ করে। ভেকুর ড্রাইভার জানেন না কি জন্য ভবনটি ভাঙা হচ্ছে এবং কাদের নেতৃত্বে এসেছেন তাও স্পষ্ট বলতে পারেন নি। বিক্ষুব্ধ জনতা ভেকুটিকে আটক করে, আটকের কিছুক্ষণ পরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব বাছার ও তার কর্মীরা এসে প্রভাব বিস্তার করে ভেকুটি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। আমার ভবনটি কেনো শুক্রবার জুম্মার নামাজ বা দুপুরে কেনো এভাবে ভাঙা হলো, ও আদালতের আদেশ পাওয়ার পরও কেনে তারা অফিস ছুটি থাকা অবস্থায় ভবন ভাঙার কার্যক্রম চালালো তার সদুত্তর আমি পায়নি। আমি কোর্টের দ্বারস্থ হবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল আউয়াল বলেন, প্রতিষ্ঠানটির লিজকৃত অংশ অক্ষত রেখে সরকারি জায়গায় নির্মাণ করা বর্ধিত অংশ অপসারণ করা হয়েছে। তাছাড়া অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের শর্ত ভঙ্গ করে প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতল করা হয়েছে, যা লিজের পরিপন্থী।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির দোতলায় আক্তার হোসেন খান লাবু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাহবুদ্দিন ট্রেডিং কোং ও তার ছোট ভাই আতাউর রহমান খানের ঠিকাদারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিমান্ত ট্রেডার্সের অফিস রয়েছে। আর নিচতলায় সুপার শপের কাজ চলমান এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল “নিউজ বায়ান্ন ২৪” এর সম্পাদক অফিস।
হলদিয়া বাজারের বিভিন্ন জনের মুখে শোনা গেলো আতাউর রহমান খান বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। সে ভবনের নিচতলায় কিছুদিন আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ মিটিং করেছিলেন। এতে শাসক দল কিংবা বিরোধী পক্ষ প্রশাসনকে প্রভাবিত করে প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলেছে বলে জনমুখে শোনা যায়।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © 2023 নিউজ বায়ান্ন ২৪
Leave a Reply