নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব–সংকটে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর যমুনা নদী। নদীর বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে বালুর চর। যমুনায় চর পড়ে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় পানি সংকটে রয়েছে যমুনা সার কারখানা।
বর্তমানে ব্যয় বহুল অর্থ খরচ করে ডীপ পাম্প সেঁটের মাধ্যমে যমুনা সার কারখানায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
জরুরী ভিত্তিতে সরকারি ভাবে পরিকল্পনা মোতাবেক নদী ড্রেজিং করে যমুনা সার কারখানার পানি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে ও নদীটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঝখানে চর থাকায় নদীর পানির প্রবাহ অনেক স্থানে ক্ষীণ ধারায় আঁকাবাঁকা হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরিষাবাড়ী উপজেলার দক্ষিণে পোগলদীঘা ইউনিয়নের কান্দারপাড়া হতে আওনা ইউনিয়নের জগন্নাথগঞ্জ ঘাট হয়ে পিংনা ইউনিয়নের রসপাল পর্যন্ত যমুনা শাখা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। এতে পানি প্রবাহ ও শ্রোতধারা বন্ধ হয়ে ফসলি জমিতে সেচ ব্যবস্থা, নৌ চলাচলসহ তারাকান্দিতে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লি: এর পানি সরবরাহের সংকট দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার জিএম (প্রশাসন) মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, যমুনা নদীতে পানি কমে গেছে। পানি সরবরাহ পয়েন্টের স্থানে নদীর নাব্যতা হারিয়ে চর জেগে উঠার ফলে ডিপ পাম্প সেঁটের মাধ্যমে কারখানায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ পানিতে আয়রন অন্যন্য উপাদান শোধন করে ব্যবহার ব্যয়বহুল। জরুরী ভিত্তিতে সরকারি ভাবে পরিকল্পনা মোতাবেক নদী ড্রেজিং করে যমুনা ফার্টিলাইজার কারখানার পানি সরবরাহ পয়েন্টের ও নদীর গতিপথ চালু রাখার জন্য ড্রেজিং প্রয়োজন।
যমুনা সার কারখানার সিবিএ সভাপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে যমুনা ফার্টিলাইজার কারখানার উৎপাদন চালু রাখার স্বার্থে যমুনা নদীর জলধারা, নদীর গতিপথ চালু রাখার জন্য নদী ড্রেজিং করে সার উৎপাদনের জন্য পানি সরবরাহ একান্ত প্রয়োজন। আওনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল হোসেন জরুরী ভিত্তিতে ড্রেজিং করে নদীপথ সচল করে যমুনা সার কারখানায় পানি সংকট অতি দ্রুত সমাধানের দাবি জানান।
ব্যবসায়ী আঃ কদ্দুস বলেন, নদী পথে মালামাল পরিবহন খরচ কম, তাছাড়া কৃষকের সেচ ব্যবস্থা জন্য পানি প্রয়োজন। তাই নদী ড্রেজিং করা প্রয়োজন। অপর বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ফিরোজ আলম জানান, নদী পথে নৌকা দিয়ে মালামাল পরিবহন অত্যান্ত কম খরচ ও কম সময়ে সহজেই মালামাল আনা নেওয়া করা যায়। কাজেই নদী খনন করে নদীর পানির প্রবাহ, গতি পথ ও শ্রোতধারা চালু করা দরকার। কৃষক মন্জু মিয়া, মজনু মিয়া ও শিপন মিয়া, মেম্বার আনিছুর রহমান জানান, নদীতে পানি না থাকায় আমরা ফসলের খেতে পানি সেচ দিতে পারছি না। ডিপ মেশিন দিয়ে পানি সেচ ব্যয়বহুল। তাই নদী ড্রেজিং করা প্রয়োজন বলে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। নদী ড্রেজিং করে পানির শ্রোতধারা চালু ও নদীর গতিপথ রক্ষা করার জন্য জামালপুর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
Leave a Reply