দেশের অন্যতম বৃহৎ আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল হিসেবে খ্যাত মুন্সীগঞ্জের লৌহজেংর কৃষকদের চোখে এখন শুধুই গভীর অন্ধকার । নিন্মচাপের কারনে গত দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলার প্রায় ৮ হাজার আলু চাষীর এখন মাথায় হাত, টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাদের অনেক আবাদী আলুর জমি। চাষীরা বলছেন, গত এক সপ্তাহ থেকে দশ দিনপর মধ্যে যেই সকল জমিতে আলুর বীজ রোপন করা হয়েছে ঐ সকল জমির বীজ ই প্রায় সব নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার উপজেলার ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ শত হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে প্রায় সাড় ৪শত হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।
আলু চাষীরা জানান, উপজেলার বেশিরভাগ জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। সোমবার দুপুরেও বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থামলে কৃষকরা আলু রোপণের জমি থেকে পানি সেচের মেশিন লাগিয়ে জমির পানি নিষ্কাশন করবে।
উপজেলার গাওদিয়া ইউনি হাড়িদিয়া গ্রামের আলু চাষী কাতৃক দাস জানান , ‘এবার আমি সাড়ে ১৫ একর জমিতে আলুর বীজ লাগিয়েছি। সার, শ্রমিক খরচ ও জমি চাষ বর্গা জমির মালিককের টাকা দিয়ে প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে আমার সব জমিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। লাভের আশায় লগ্নি করে এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার এনে আলু চাষ করেছিলাম, কিন্তু বৃষ্টি আমার সব কিছু শেষ করে দিল।’ প্রায় একই বক্তব্য আলু চাষী হাজী মেরাজ মিয়ার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শরীফুল ইসলাম বলেন, “নিম্নচাপ এবং অসময়ে বৃষ্টির কারণে লৌহজেংর আলু চাষীদের ক্ষতি হয়েছে। তবে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে লৌহজেং আলু বপণ শুরু হয়েছিল। যে সব জমিতে আলুর গাছ বা লতাপাতা গজিয়েছে সেই জমিতে ক্ষতি হওয়ার পরিমাণ কম। আর যেসব জমিতে সপ্তাহখানের মধ্যে বীজ লাগিয়েছে তাদের ক্ষতির পরিমান বেশি। তাছাড়া তাৎক্ষনিক সমাধানের জন্য আমাদের কৃষি অফিসের অনেক লোক মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। কৃষকদের ক্ষতি পোষানের জন্য ক্ষতিগ্রস্হ কৃষকদের তালিকা করে সরকার কাছ থেকে বিশেষ প্রণোদন সহ অন্যান সহযোগিতার জন্য সরকারকের কাছে আমরা সুপারিশ করবো।